বিজ্ঞানের ম্যাজিক

বিজ্ঞানের ম্যাজিক, ম্যাজিকের বিজ্ঞান!!!!!

আমরা টিভির সামনে বসে কতই না ম্যাজিক শো দেখি। ম্যাজিশিয়ান রুমাল থেকে খরগোশ বানাচ্ছে, টুপির মধ্যে থেকে কত কিছু বের করে আনছে! আমরা হাততালি দিই, তারপর গালে হাত দিয়ে ভাবি, `আচ্ছা, কীভাবে হল এটা?’ ম্যাজিশিয়ান কিন্তু কখনওই বলে না সে কীভাবে ম্যাজিকটা করল। তাই আমরাও আমাদের প্রশ্নের উত্তর পাই না। আজকে আমরা একটা ম্যাজিক শিখব, নিজেরা করব এবং জানব কীভাবে ম্যাজিকটা হল। তো, শুরু করা যাক।

প্রথমে এই ম্যাজিকটার জন্য আমাদের দরকার এক কাপ দুধ, একটা মাঝারি আকারের সাদা রংয়ের প্লেট, থালা-বাসন ধোওয়ার বা লিকুইড সাবান (যেমনঃ ভিম, ট্রিক্স বা লাইফবয়), কটনবাড আর লাল, নীল, সবুজ বিভিন্ন রঙের ফুড কালার। এইটুকু শুনে তোমরা অনেকেই কপাল কুচকে বলতে পার, ‘ফুড কালারটা আবার কী?’ ফুড কালার খাবারে ব্যবহার করা রং। জর্দা, মিষ্টি, কেক ইত্যাদি বানাতে ব্যবহার করা হয়। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে গেলেই পাওয়া যাবে। আর কপাল ভালো থাকলে তোমার বাসার ফ্রিজেই পাওয়া যাবে।

এবার, শুরু করা যাক ম্যাজিক। প্রথমে প্লেটে খুব অল্প পরিমাণে দুধ ঢেলে দিতে হবে। এবার আস্তে করে ফুড কালারের লাল, নীল, সবুজ, হলুদ কয়েকটা রং এক ফোঁটা করে ঐ দুধের মাঝে দিবো। খেয়াল রাখতে হবে ঐ রঙের ফোঁটাগুলো যেন কাছাকাছি থাকে এবং প্লেটের একদম মাঝের দিকে থাকে। এইবার একটি কটনবাড নিয়ে ওটার এক পাশ প্লেটের মাঝে স্পর্শ করাই। কিছু কি হচ্ছে? উঁহু। হল না তো কিছু।

আচ্ছা, এবার কটনবাডের আরেকটি প্রান্তে একটু লিকুয়িড সাবান লাগাই এবং ঐ প্রান্তটা এইবার প্লেটের মধ্যে রংয়ের উপর লাগাই। ১০-১৫ সেকেন্ড ধরে রাখি। ম্যাজিইইইক!

রংগুলো ম্যাজিকের মতো পুরো প্লেটে ছড়িয়ে গেলো। কী অদ্ভূত সুন্দর দেখাচ্ছে! তাই না?

ম্যাজিকটা দেখে অবাক হলে নিশ্চয়ই? এইবার তোমাদের মনে প্রশ্ন জাগছে, আচ্ছা এটা কীভাবে হল? কেন হল? আমি টিভির ঐ দুষ্টু ম্যাজিশিয়ান না। তাই আমি তোমাদেরকে বলে দিব, এটা কীভাবে হল।

আমরা সবাই ছোটবেলা থেকেই জানি, দুধ একটি সুষম খাদ্য। একটা সুষম খাদ্যে সব রকম উপাদান থাকে। দুধেও ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, তেল ইত্যাদি সব থাকে। যখন লিকুইড সাবান দুধে মেশানো হয়, তখনই ম্যাজিকটা শুরু হয়। সাবানের দুই প্রান্তে দুই রকম বৈশিষ্ট্য থাকে, এটাকে বলে বাইপোলার বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই সাবান ঐ দুধের প্রোটিন আর তেল এর বন্ধন কে দুর্বল করে দেয়। সাবানের একটি প্রান্ত দুধে মিশে যায় আর আরেকটি প্রান্ত দুধের তেল এর অণুগুলার সঙ্গে মিশতে চায়। ঠিক তখনই দুধের তেলের অণুগুলো দুধের মাঝেই ছুটোছুটি শুরু করে আর সাবানের ঐ প্রান্তের অণুগুলো তাদের পিছনে ছুটতে থাকে। তখন ঐ ফুড কালারের রংগুলোর কারণে অণুগুলোর এই ছুটোছুটি আমরা দেখতে পারি।

এই হলো ম্যাজিকের রহস্য। আশা করি, বুঝতে পেরেছ। একটু খেয়াল করলে দেখবে, একটু পর রঙের ছুটোছুটি থেমে গেছে। তারপর আবার একটু সাবান কটনবাডে লাগিয়ে আগের মতো দুধের মাঝে মিশিয়ে দেখ তো কী হয়। আবার শুরু হয়ে যাবে ছুটোছুটি।

No comments:

Post a Comment

Thanks

Ip Sohel Rana

কি কারণে এই সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন SEO করা 

আপনাদর অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কেন আমরা এই SEO করবো।এর জন্য সবচেয়ে ভাল উত্তর হল ওয়েব সাইটের ভিজিটর বা ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য আমরা এই S...

Ip Sohel Rana