আলোর ব্যাতিচার

হাইলাইট করা শব্দগুলোর উপর মাউসের কার্সর ধরতে হবে। মোবাইল ব্যবহারকারীরা শব্দগুলোর উপর স্পর্শ করো
ক্লাসে একটা সমস্যা কেউ কঠিন ভাবে করলে। আরেকজন আবার সহজভাবে করলে বা উন্নত উপায়ে করলে। শেষ পর্যন্ত সবাই সহজ বা উন্নত সমাধানটাই কিন্তু বেশি পছন্দ করবে। বিজ্ঞানে এমন ঘটনা অহরহ হয়, অনেক সময় দেখা যায় একটা তত্ত্ব দিয়ে কিছু ঘটনা ব্যাখ্যা করা গেলেও অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করা যায় না। এভাবেই নতুন নতুন উন্নত তত্ত্বের জন্ম হয়, যেগুলো বিজ্ঞানীরা বেশি গ্রহণ করেন।
আলোর ব্যাতিচার তেমনই একটা ব্যাপার। ব্যাতিচার মূলত তরঙ্গের ধর্ম। আলো যদি ব্যাতিচার দেখায় তাহলেই তো প্রমাণ হয়ে গেলো যে আলো এক প্রকার তরঙ্গ। বিজ্ঞানী হাইগেনস বহু আগেই তরঙ্গতত্ত্ব দিয়ে গেছেন, তবে বিজ্ঞানীরা তখনও নিউটনের তত্ত্ব নিয়ে বসে ছিলেন। আলোর ব্যাতিচার দেখার পর বিজ্ঞানীরা বুঝলেন- কণাতত্ত্ব দিয়ে তো এটা ব্যাখ্যা করা যায় না! তাই এবার তরঙ্গতত্ত্ব গ্রহণ করেন।
আচ্ছা বন্ধুরা। ধরো তোমার হাতে একটা টর্চ লাইট আছে। তুমি দেয়ালের উপর আলো ফেললে, এতে দেয়াল আলোকিত হলো। তোমার বন্ধুর কাছেও টর্চ আছে, সেও আলো ফেলে দেখলো। কি ভাবছো, আরো আলোকিত হবে? হ্যা, তাই হবে। কিন্তু বন্ধুরা, সবসময় যে আলোর উপর আলো ফেললে আরো আলোকিত হবে এমন কিন্তু না। কিভাবে সম্ভব ভিন্ন কিছু হওয়ার? সম্ভব যদি আমরা আলোকে তরঙ্গ হিসেবে চিন্তা করি।
যখন একই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের দুটি তরঙ্গ একটি আরেকটির উপর বসে পরে, তখন পর্যায়ক্রমিক ভাবে গঠনমুলক আর ধ্বংসাত্মক দশার সৃষ্টি হয়। এটাই ব্যাতিচার। আলোর বেলায় পরপর উজ্জ্বল আর অনুজ্জ্বল দশা সৃষ্টি হয়। এটাই আলোর ব্যাতিচার। বিশ্বাস হচ্ছে না? তবে চলো গভীরে যাই!
বন্ধুরা এখন আমরা আলোচনা করবো আলোর ব্যাতিচার কীভাবে তৈরি হয়। তাহলে তার আগে ব্যাতিচার কীভাবে তৈরি হয় সেটা পরিষ্কারভাবে দেখার চেষ্টা করি চলো। পানির তরঙ্গ মনে আছে? পরপর ঢেউ তৈরি হয় না? এরকমই একটা ঢেউ দেখাচ্ছি চিত্রে। একবার উপর থেকে তাকাবো, আরেকবার পাশ থেকে চিন্তা করবো। তরঙ্গ শীর্ষ বোঝানোর জন্য আমরা নীল দাগ আর আর তরঙ্গ পাদ বোঝাতে ডোরা দাগ চিন্তা করি।
এবার চিত্রের মতো এরকম দুইটি উৎস চিন্তা করো যারা পরস্পর একটির সাথে আরেকটির উপরিপাতন ঘটবে। এখন A1, A2, A3 বিন্দুতে উভয় তরঙ্গের তরঙ্গ শীর্ষগুলো মিলিত হবে। B1, B2, B3 বিন্দুতে তরঙ্গ পাদ আর তরঙ্গ শীর্ষগুলো মিলিত হবে। যদি একই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আর একই বিস্তারের দুইটি তরঙ্গ এভাবে মিলিত হয়, তাহলে সংজ্ঞানুসারে A1, A2, A3 বিন্দুগুলোতে গঠনমূলক আর B1, B2, B3 বিন্দুতে ধ্বংসাত্মক ব্যাতিচারের সৃষ্টি হবে।
তো আলোর বেলায় কীভাবে ব্যাতিচার সৃষ্টি করবো? প্রথমে, আমাদের একই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আর কাছাকাছি বিস্তারের আলো লাগবে। কথা হচ্ছে, একেবারে হুবুহু একই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের দুইটি আলোক উৎস সৃষ্টি করাটা কঠিন। তাই একটা আলোক উৎসকেই যদি আমরা দুইটি চিরের মধ্যে চালনা করি, তাহলে একই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের দুইটি আলোক উৎস তৈরি হয়ে গেলো যারা একটি অপরটির উপর উপরিপাতিত হবে। তাহলে দেখ, আলোক উৎস দুটির তরঙ্গদৈর্ঘ্য সমান। আবার, পর্দায় কোনো বিন্দুতে সময়ের সাথে ব্যাতিচারের ধরন একই রকম থাকছে। তাই, পর্দার প্রতিটি বিন্দুর উপর এদের দশা পার্থক্যও নির্দিষ্ট। তাই এরা সুসঙ্গত উৎস। সংজ্ঞাটা এভাবে দেওয়া যায়:
স্থায়ী দশা পার্থক্য ও তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোক নির্গমনকারী দুটি আলোক উৎসকে সুসঙ্গত উৎস বলে।
তাহলে আবার ব্যাতিচারের কথায় ফিরে আসি। এই সজ্জা হতে যদি একটু দূরে একটা পর্দা স্থাপন করি তাহলে তরঙ্গদ্বয় পর্দার উপর একই দশায় মিলিত হলে সর্বোচ্চ উজ্জ্বল, তারপর কিছু দূরে গিয়ে উজ্জ্বলতা হারাতে থাকবে (কারণ দশা পার্থক্য বারতে থাকবে) আর এক পর্যায়ে বিপরীত দশায় মিলিত হবে। তাহলে সেখানে কিছুই দেখা যাবে না অর্থাৎ অন্ধকার দেখাবে, তার কিছু পরে আবার দশা পরিবর্তত হতে থাকবে আর এর জন্য উজ্জ্বল হতে থাকবে আর এক সময় যখন একই দশায় মিলিত হবে তখন আবার সর্বোচ্চ উজ্জ্বল হয়ে যাবে। এভাবে চলে থাকবে। এটাই কিন্তু ইয়ং এর দ্বিচীর পরীক্ষা যেটা আমরা পরবর্তী স্মার্টবুকে দেখবো। তার আগে দেখো তো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারো কিনা।
সঠিক শব্দটি টেনে শূন্যস্থানে বসিয়ে দিতে ভুলো না যেন!
1) ধ্বংসাত্মক ব্যাতিচার গঠনের জন্য দুইটি তরঙ্গ প্রয়োজন।
2) সুসঙ্গত উৎসে দুইটি আলোক উৎস থাকে যাদের দশা পার্থক্য থাকে।
3) ভিন্ন ভিন্ন বেগে গতিশীল দুইটি তরঙ্গ দিয়ে হবে না।

No comments:

Post a Comment

Thanks

Ip Sohel Rana

কি কারণে এই সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন SEO করা 

আপনাদর অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কেন আমরা এই SEO করবো।এর জন্য সবচেয়ে ভাল উত্তর হল ওয়েব সাইটের ভিজিটর বা ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য আমরা এই S...

Ip Sohel Rana