প্রতিদিন তাঁদের সময় কাটে কম্পিউটারের পর্দার সামনে। কি-বোর্ড আর মাউসের ক্লিকে ক্লিকে সারাক্ষণ নতুন ছন্দ খুঁজে ফেরেন তাঁরা। মুক্ত স্বাধীন হয়েও চলেন ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে। তাঁদের পেশা এই কম্পিউটার ঘিরেই। তাঁরা মুক্তপেশাজীবী মানে ফ্রিল্যান্সার। বাংলাদেশে বসে কাজ করে চলেন দূর কোনো দেশ বা শহরের গ্রাহকের জন্য। ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের কাজে স্বাধীনতা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে ভিন্নতাও। সবাই যখন পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটান, তাঁদের হয়তো তখন কম্পিউটার নিয়ে যুক্ত থাকতে হয় ইন্টারনেটে। ঈদের সময়টা কেমন কাটে ফ্রিল্যান্সারদের—চলুন জেনে আসি।
ঈদের সময় কাজ বেড়ে যায় চার গুণ
‘আমি কেনাকাটা করতে পছন্দ করি। বাইরে বেরোলেই যেখানে যা পছন্দ হয় কিনে ফেলি। তাই ঈদের কেনাকাটায় আলাদা করে খুব একটা সময় দিই না। একদিন হয়তো যাই, যা মনে ধরে কিনে ফেলি। আর আমার ঈদ মানেই কাজের পরিমাণ চার গুণ বেড়ে যাওয়া।’ বলছিলেন ইন্টারনেট বিপণনে সফল একজন মুক্তপেশাজীবী মারজান আহমেদ।
বাংলাদেশে মুক্তপেশার শুরুর সময় থেকেই এ পেশায় জড়িত মারজান। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল বা ইন্টারনেট প্রচার-প্রসারের কাজ করে থাকেন তিনি। শুরুর কয়েক বছরের মধ্যেই অনলাইন আউটসোর্সিং কাজের বাজের (মার্কেটপ্লেস) বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ লাখেরও বেশি ফ্রিল্যান্সারের মধ্যে মারজান সেরা দশে চলে আসেন। আর নারীদের মধ্যে তাঁর অবস্থান ছিল এক নম্বর। এ সাফল্য নিজের উৎসাহ থেকেই এসেছে মনে করেন মারজান।
মারজান আহমেদ বলেন, ‘তুলনামূলক কম সময়ে যে সাফল্য পেয়েছি, এর কারণ আমি সব সময় কাজ করতাম। কত ঈদ যে ঘরে বসে কাজ করেই কাটিয়েছি, সে হিসাব নেই। কারণ ঈদের সময় ফ্রিল্যান্সারের অভাব হয়। তখন গ্রাহকেরা বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে হলেও কাজ করাতে চান। আমি সে সুযোগটা কাজে লাগাতাম।’ ঈদের আগের রাত জেগে কাজ করলেও ঈদের দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠেন মারজান। ‘সবার সঙ্গে টুকটাক কাজ করি আর একটু সময় দিই। এরপর প্রায় সবাই কোরবানি দেওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আমি ফ্রি সময়টা কাজে লাগাই। চুটিয়ে কাজ করি অনেকক্ষণ। তারপর আবার সাংসারিক কাজ, এর পরের আধবেলা অন্যদের মতোই কাটে,’ বলেন মারজান।
ঘুরতে গিয়েও কাজ করি, আনন্দই লাগে
যেকোনো দক্ষতাই যে পেশা হতে পারে, সেটা প্রমাণ করেছেন বেসিস আউটসোর্সিং পুরস্কার বিজয়ী অজন্তা রেজওয়ানা মির্জা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক পড়ার সময়ই ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কাজে আগ্রহ খুঁজে পান। তবে তখনই কাজ শুরু করার সুযোগ পাননি। স্নাতক শেষে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সময় স্বাধীনতার ঘাটতিটা অনুভব করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমনা জীবনের স্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে মনে পড়ে আউটসোর্সিংয়ে নিজের আগ্রহের কথা। ব্যস, আর দেরি না করেই যোগ দেন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে লেখক হিসেবে। চাকরি ছেড়ে পূর্ণকালীন মুক্তপেশাজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
এখন শুধু নিয়মিত গ্রাহকদের ই-বুক, পণ্যের বিবরণী বা যেকোনো প্রতিবেদন লিখে দেন তিনি। ১৭ আগস্ট যখন মুঠোফোনে তাঁর সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তখন তিনি কক্সবাজারে। ঈদের পরিকল্পনা জানতে চাইলে বলেন, ‘দুবার মা হওয়ার পর আমি কাজ অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছি। সন্তানদের প্রতি মনোযোগী হতে চাই। তাই বেছে বেছে কাজ করি, তবু কাজ শেষ হয় না। চেষ্টা করি পরিকল্পনা করে কাজ করতে। কী কাজ করব, কখন করব, কতক্ষণ করব, এভাবে। ঈদের আগেই চেষ্টা করি কাজ সেরে ফেলতে। তবে শেষ হয় বলে মনে হয় না।’
ঈদের দিন অবসর পান কি না, জানতে চাইলে অজন্তা বলেন, ‘আর দশজন মানুষের মতো ফ্রিল্যান্সারদের ঈদ উদ্যাপন হয় কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। ওই যে বললাম ঈদের আগেই কাজ শেষ করার কথা—আমি নাহয় শেষ করলাম, কিন্তু দেখা গেল কোনো লেখায় একটা সংশোধনের প্রয়োজন পড়ছে। এমনটা হলে ঈদের দিন বলে কোনো কথা নেই, সেটা করতেই হবে। নিজের কাছেই দায়বদ্ধতা থাকে।’
ঈদের সময় কাজ যেন কিছুটা বেড়ে যায়। তাই অজন্তা ঈদের আগেই ছুটি কাটিয়ে আসেন পরিবারসহ। এবার যেমন গেলেন কক্সবাজারে। অজন্তা বললেন, ‘আমার গ্রাহকদের বললেই হয়, আমি এ কটা দিন অবসর কাটাব, তবে সে জন্য অনেক কাজ করে যেতে হয়। আবার কোথাও ঘুরতে গিয়েও কাজ করি। এসব বিরক্ত না, বরং আনন্দই লাগে।’
🌎🏪🏯 Ip Sohel Teaching Home ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি আপনার লেখাটি ই-মেইল করুন এই ঠিকানায়: ipsohel0@gmail.com
লেখাটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না!
আমাদের সেকশনসমূহ
আমাদের সেকশনসমূহ Select Category Global ইন্টারভিউয়ের সাতসতেরো এইচএসসি একাডেমিকস্ ক্যারিয়ার চাকরির খোঁজে! জীবন থেকে নেয়া জীবনযাত্রা জীবনী টেকনোলজি দৈনন্দিন পড়াশোনার টিপস প্রেরণামূলক গল্পের ঝুলি প্রোডাক্টিভিটি বিজ্ঞান বিবিধ ব্লগ ভিডিও ভর্তি পরীক্ষা ভ্রমণ লাইফ হ্যাকস সহশিক্ষা সাম্প্রতিক সিভির হালচাল সেরা বই স্কিল ডেভেলপমেন্ট
🏥🏥
আপনার লেখা পাঠিয়ে দিন
IP Sohel Teaching Home ব্লগে আমরা পাঠকদেরও উৎসাহিত করে থাকি তাদের পড়াশোনা-সংক্রান্ত যে কোনো মতামত ব্যক্ত করতে।
আপনার যে কোনো লেখা/ মতামত আমাদের কাছে পৌঁছে দিতে ই-মেইল করুন এই ঠিকানায়: ipsohel0@gmail.com
No comments:
Post a Comment
Thanks